অস্তরাগের রেশ – রত্না রায়

গোপন কিছু অসুখ আজকে থাকনা বলা ওই বন্ধ ঠোঁটের নীড়ে।ছুঁয়ে থাকার ইচ্ছে নকশারাডুবছে দ্যাখো বাদলা ঝালর চিরে। অভিমানী বৃষ্টি ফোঁটার স্রোতেউঠোন জুড়ে সমুদ্র থ‌ইথ‌ইকালশিটে দাগ সুপ্ত অন্তরালেআঙুল গলে রামধনু হ‌ইচ‌ই। ব্যাঙের ছাতা অন্ধ কিছু কোণেঅনাদরে স্বপ্ন ছুঁয়ে বাঁচে।অবিশ্রান্ত ঝর্ণাধারায় আগুনমেঘশাড়ির জংলা জমিন খাঁজে। বালিঘড়ির উল্টো চলন শেষবৃষ্টিছাপে পর্ণমোচী বেলাপ্রহর প্রহর পড়ন্ত বিকেলফুরিয়ে এলো বিন্নি ধানের…

ধর্ষিতা – নীলিমেশ রায়

আকাশ আর পৃথিবীর উৎসবে –যেদিন মানুষের ডাক পড়েছিল!সভ্যতার সব উন্নতির প্রতিশ্রুতি নিয়ে –সে এসেছিল; নিষ্পাপ শিশুর মতো ।মাথা পেতেছিল –আদিগন্ত বনানীর আশ্রয়ে।তারপর, বিবর্তনের আবর্তনে,নিজেকে প্রমাণ করল –প্রজাতিয় সংগ্রামে!ভুলে গেল অতীত!বর্তমানের নেশায়,ভবিষ্যৎ শাসনের আগ্রহে –যে গর্ভে জন্ম;তাকেই ধর্ষণ করল বারবার!প্রযুক্তিতে প্রযুক্তিতে – প্রগতির চাকায়পিষে দিল,নিজের পূর্ব পরিচয়!বিজ্ঞান কে বন্ধু করে;ভাড়া খাটালো গুন্ডামির।তবুও নিরপরাধ ঔদ্ধত্যে –বৈঠকে বৈঠকে…

এক ফাগুনের গান – অনুরাগ দত্ত | শারদীয়া সংখ্যা

(১) শীতের বিকেল,পাঁচটা বাজে,সন্ধ্যে হয়ে আসেতোমায় আমায় দেখা হলো কলেজ গেটের পাশে“অমৃতা না?” ডাকলে তুমি,তাকাই আমি ফিরেঅন্ধকারে মুখ ঢেকে যায়,বললে তুমি,”কিরে?চিনতে পারিস?” এগিয়ে এলে আমার কাছাকাছি“সুমন্তদা! কেমন আছো?”,” আমরা ভালো আছি,তোর কথা বল, কোন ইয়ারে? অনার্স নিলি নাকি?”“প্রথম বর্ষ,পাইনি অনার্স”, চোখ নামিয়ে থাকি“দাদার খবর?…এলাম তবে”, চললে কলেজমুখেথমকে আছি,চমকে গেছি,কাঁপছি গভীর সুখেদাদার বন্ধু সুমন্তদা, প্রথম ভালোলাগাপ্রথম…

গুচ্ছ কবিতা – রূপময় ভট্টাচার্য | শারদীয়া সংখ্যা

টিকিট কেউ কন্ডাক্টারকে ঠকিয়ে দশটাকার টিকিট কেটে বারোটাকার দূরত্ব যায়মেরুদন্ড যুক্ত কেউ কেউ সঠিক ভাড়া জানে, চুপচাপ ন্যায্য মূল্যে যাতায়াত করে  –আর আমারই মত বুরবাক কাউকে কাউকে কন্ডাক্টর ঠকিয়ে আট টাকার দূরত্ব পেরোতে দশটাকার টিকিট গছায়। প্রতিবন্ধী সিটে বসা লোকটা মনে মনে  হাসে- টাকার উপরেই তাহলে নির্ভর করেনাকে কতদূর যাবে… প্রাক্তন মুচকি হাসি হেসেভাড়া মিটিয়ে…

নৈবেদ্য – এলা বসু

গাঢ় অন্ধকারে তারা অনুক্ষণ জ্বলে , জ্বলতে জ্বলতে ক্লান্তচোখে ভাবে বুঝি জ্বলার শেষ হল , এলোচুলের দুপুর ঘুমে ঈশ্বরী টুপ্ করে ডুব দেয় আধোঘুমে নিজস্ব মগজাস্ত্রের ভরসায় , আর দাবার চালে মত্ত মৌমাছি বিষাক্ত হুল নিয়ে তীব্র অপেক্ষায় সাজিয়ে রাখে মুড়ি মুড়কি বাতাসা অথবা শাঁখের আওয়াজ আর দুটো নকুলদানা , জল । সন্ধে গড়িয়ে আসে…

দুখজাগানিয়া – মৈত্রেয়ী চক্রবর্তী

বিগত কিছুদিনের হিসেব নিকেষ এর সময় এসেছে এবার- ধূসর হাইওয়ে পেরিয়ে মলিন সবুজ প্রান্তর; রোজ পেরিয়ে যাই আর ভাবি- সময় এত কম কেন! কেউ নেই,কেউ থাকেনা চিরদিন, তবুও কত হিংসা কত বিদ্বেষ কত অজুহাত। সব একে একে তলিয়ে যায় সময়ের ঘূর্ণিপাকে। এর ভেতরেও আবার কেউ কেউ আসে মুখোশ পরে, দিয়ে যায় বোবাকান্না আর নিষ্পলক কয়েকটা…