লেডি ম্যাকবেথ আত্মহত্যা করলো। প্রাসাদের মাঝে ক্ষমতার চূড়ায় অথচ কি তীব্র এক বিষণ্ণতা। চূড়ায় উঠে আর নেমে আসা যায়না। একলা ম্যাকবেথ। অন্ধকার আর রক্তের মাঝে একলা। নিজের মুখ নিজে বরদাস্ত করতে না পারা মানুষ। মুখোশ আর নতুন মুখোশের লড়াই চালিয়ে যাওয়া মানুষ। আলো আর অন্ধকারে আবছা শরীর বলে দিয়েছে সে রাজরক্তের পিপাসু। মানুষ কতটা প্যাশনেট হতে পারলে তবে রঘুপতি হয়। শেষ অবধি লড়াই করে যাওয়া নিজের বিশ্বাসের প্রতি। তারপর নিজেকেই নিজে ভেঙে চুরে তছনছ করে ফেলা। তবুও তো ফেলাসের মৃত্যু নেই। এক মুখ থেকে হাজারো মুখে ম্যাকবেথ ঘুরতে থাকে নিজেকে খুঁজতে।
ইতিহাস আসলে ক্ষমতার লড়াই এর কথা বলে। যে ক্ষমতা একদিন বদলে দেবে মানুষের ব্যবহার আদর্শ বিশ্বাস। অথচ জাল যে আছে তাতো স্পষ্ট। জালের এপারে যেমন আমরা বন্দি , তেমনি রাজাও তো ওপারে বন্দি। জলের আড়াল থেকেই তো সে শুধু কথা বলতে পারে। তার খাবার তো কোনো এক ফাঁক দিয়ে ঢুকিয়ে দিতে হয় জালের মধ্যে। তবু সে রাজা। আমরা চোখ বন্ধ করে মেনে নেব। আর অপেক্ষা করবো একদিন পুঁজিবাদ আমাদের পাশে এসে বসবে। বলবে ইমপিরিয়ালিজম হল তোমার একমাত্র আদর্শ। সেদিন জাল থাকবেনা। আড়াল থাকবে না। বিশু গান গাইতে গেলে তৎক্ষণাৎ তাকে গলা টিপে হত্যা করা হবে। মারি অরি যা পারি কৌশল। কথা আর খাদ্য কেড়ে নিলে মানুষ তোমার বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য। লঙ্কা অবরোধ করে রাম তো এমনিই জিতে যেত। রাজসিংহ তো কবে থেকে বলছে রাজস্থান নয় হিন্দু একটা মানসিকতা।

তাই ম্যাকবেথ রক্ত চেয়েও পায়না। ততদিনে বদলেগেছে মানুষের জীবন। ক্ষমতায়নের লড়াইয়ে মানুষ ধীরে ধীরে বুঝে গেছে কয়েকটা মব লিনচিং শুধু উত্তেজনা তৈরি করে। আদতে মানুষের হাতে ক্ষমতার নামে তুলে দিতে হবে লোভ। অধিকার দেখানোর লোভ। চিৎকার করার লোভ। একদিন সেই এনে দেবে রাজসিংহাসন।