কবিপক্ষ শব্দটা যাঁর জন্য উৎপত্তি তিনিই কবিগুরু। কেন জানি না, বৈশাখ মাসটা এলেই আমার মনটা ভাল হয়ে যায়। পঁচিশে বৈশাখ। প্রতিবছরই আসে নিয়ম করে। এবছরও তার অন্যথা নেই। কিন্তু কত কিছুই না উলট পালট হয়ে গেল এই দু বছরে সারা বিশ্ব জুড়ে। তবু তারি মধ্যে মনের স্থিতি ধরে রাখার চেষ্টা তো করতেই হয়। কত কিছুই…
Tag: Rabindranath Tagore
এবং ২৫ শে বৈশাখ – মহুয়া চক্রবর্তী
ভোরবেলার পার্কস্ট্রীট। সেদিন তখনও প্রথম ট্রাম চালু হয়নি রাস্তায়। আধো অন্ধকারে ৪৯ নম্বর পার্ক স্ট্রীটের বাড়িটা অস্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। বাড়ির তেতলার ঘরে, হঠাৎ পায়ের কাছে কিসের যেন ছোঁয়া পেয়ে ঘুম ভাঙল রবির। অবাক হয়ে দেখলেন, প্রণাম করে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে ভাগ্নি সরলা। পায়ের কাছে দেওয়া রয়েছে বকুল আর বেল ফুলের গাঁথা মালা, সঙ্গে একজোড়া ধুতি…
অন্তরে ভুল ভাঙবে কি…?! – সম্পাদকীয়
‘অবান্তর’ পত্রিকার কর্ণধার চিরকুমার রে।না না উনি মোটেই চির কুমার নন ।আসলে হয়েছে কি, তাঁর বাবা ছিলেন রবীন্দ্র ভক্ত মানুষ চিরকুমার সভা নাটকটি তিনি পড়ার পরই ছেলের জন্ম হওয়ায় তার নামকরন করেন চিরকুমার।তবে নাটকে অতজন পুরুষ চরিত্রকে ছেড়ে দিয়ে ছেলের এই নামটিই কেন রাখলেন তা বলতে পারব না।তাই এক জাঁদরেল গিন্নি ও ৩ ছেলেমেয়েকে নিয়ে ঘোরতর সংসারী মানুষটি আজও নামে চিরকুমারই রয়ে গেছেন।এমনকি, সেই নাটকের মতো হুইস্কি,সোডা,মুরগি বা মটনের প্রতিও তাঁর একেবারে লোভ নেই।সে ওই যা একটু আছে তা হলো তাঁর তেলেভাজ প্রতি দুর্বলতা। এতেও হয়েছে চিত্তির।নামের আদ্যক্ষরের সাথে এই শখ মিলিয়ে তাঁর অধস্তন কর্মচারীরা তাকে চিড়েভাজা বলে থাকেন।তা আজ তাঁর মেজাজটি বেজায় তিরিক্ষি হয়ে রয়েছে।এই সপ্তাহের শেষে ‘সপ্তাহের হাবিজাবি’ ক্রোড়পত্রেছাপানোর মতো কোনো লেখা জোগাড় হয়নি।তারওপর তার আপিসের নতুন দুটি ফচকে ছোড়া জুটেছে কোনও কাজই হয় না যাদের দিয়ে।সাত পাঁচ ভেবে ওই দুজনকেই তলব করলেন চিড়ে…থুড়ি চিরকুমার বাবু। প্রশ্ন পুরকায়স্থ আর সন্দেহ সরখেল। ‘অবান্তর’ পত্রিকার দুই তরুণ সাংবাদিক চিরকুমার বাবুর গালি খেয়ে বেরিয়েছে খবর সংগ্রহে।বাইশে শ্রাবনের বিশেষ সংখ্যা তাই একেবারে খোদ বিশ্বকবির বিশ্বভারতীতে হাজির।ভালো খবর না হলে চাকরি নট হওয়ার হুমকি কপালে ঝুলছে যে।এধার ওধার ঘুরে,উদয়ন ছাড়িয়ে যেই শ্যামলীর সামনে এসেছে দুজনে,তাদের শ্বাস বন্ধ হওয়ার জোগাড়।একি! বাড়ির দাওয়ায় বেতের মোড়ার ওপর এ যে স্বয়ং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বসে!স্থান কাল সত্যি মিথ্যে ভুলে প্রশ্ন আর সন্দেহ সোজা ডাইভ মারে কবির পায়ে। ‘স্যার স্যার… গুরুদেব…. একটা ইন্টারভিউ দিতেই হবে বস্ … নইলে দুজনের চাকরি নিয়ে টানাটানি পরে যাবে বেঘোরে …’ কোনও সাড়া না পেয়ে দুজন মুখ তুলে দেখে, দাঁড়ির ফাঁক দিয়ে মুচকি মুচকি হাসছেন তিনি।চোখ পড়তেই বললেন, ‘আরে ওঠ,ওঠ … আমি তো এখন তোদের নশ্বর জগতে বাস করি না রে .. এখন এখানে লক না আনলক কিসব চলছে তোদের সব দেখি কেমন ফাঁকা ফাঁকা তাই দুদণ্ড নিজের বাড়ির দাওয়ায় বসে একটু জিড়িয়ে নিচ্ছিলাম .. আমার আবার ইন্টারভিউ কি রে!’ প্রশ্নঃ বেশী সময় নেব না গুরুদেব .. এই এট্টু ছোট্ট করে আর কি …(তাঁর মুখে প্রশ্রয়ের হাসি, আর সময় নষ্ট না করে সোজা প্রসঙ্গে ঢুকে পড়ে দুই সাংবাদিক) সন্দেহঃ আচ্ছা স্যার, আপনি তো ব্রাহ্ম স্যার তাই তো? তাহলে এই গুরুদেব ব্যাপারটা কি স্যার? ব্রাহ্ম সমাজে তো গুরু থাকেন না .. মানে তাই তো জানি আর কি … রবীন্দ্রনাথ : আহা! এ আবার কেমন কথা।ব্রাহ্ম দের আচার্য হয় না…না কি।আমিও হলুম সেই আচার্য।আর এটা তো আশ্রম…ব্রহ্মচর্য আশ্রম…সেই বৈদিক যুগের আদলে তা আশ্রম থাকবে আর গুরুদেব থাকবে না তা কি করে হয় বল।আর আমাদের দেশের মানুষের ধরন ধারণ তো সব জানিসই – একটা অথারিটি না থাকলে কি চলে বল! এতোগুলো বছর পড়বে একটা অথারাইজড্ সার্টিফিকেট না থাকলে হয়? তারপর আমি হলাম গিয়ে মহর্ষির উত্তরাধিকারী।বাবা যখন মহর্ষি – তখন আমি গুরুদেব… এটাই তো লজিক্যাল। তাই না? প্রঃ স্যার, আপনি তো নোবেল জয়ী, বিশ্বকবি। তারও আগে এই আপনি বললেন তখনকার সমাজের একটি গন্যমান্য পরিবারের…
রবীন্দ্রনাথ ও ফরাসী বৈভব – শ্রেয়স সরকার
১৩ই জুন, ১৯৪০। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। গরমে আর অজানা ভবিতব্যের আতঙ্কে থমকে আছে ফরাসীদের প্রাণবিন্দু প্যারিস । খাঁ খাঁ করছে রাস্তা-ঘাট, সদ্য নতুন পাতায় ভরা বাগানগুলি একেবারে একা, জনমানবহীন প্রাসাদোপম বাড়িগুলিও থমথমে আঁধারে ঢাকা। তবুও এরকমই একটি বাড়িতে লোকজনের চলাচল স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। হঠাৎই সেই বাড়ির ডোমেস্টিক টেলিফোন বেজে উঠল।‘রাডিও পারী?’‘হ্যাঁ বলুন?’‘আমি ফিলিপ পেতোঁ কথা বলছি।..’চমকে…