নারীর উক্তি – প্রীতম চৌধুরী

প্রতিদিন রাতে আমার স্বপ্নে আসে এক দানব।
রাতের নিস্তব্ধ অন্ধকারে,
ভাদ্রকালের উদগ্রীব সারমেয়র শেষ আর্তনাদে তার আগমন উচ্চারিত হয়,
আমার অবচেতনে।
পাশবিক নিঃশ্বাসের ভারে দম বন্ধ হওয়া আমি পাশবালিশ আঁকড়ে ছটফট করতে থাকি।
অবশ হয়ে আসা আমার শরীর পালাতে পারে না, জানাতে পারে না কোনো প্রতিবাদ।
মধ্যরাতের এক উন্মত্ত আকুতির ভয়ঙ্কর শব্দে সেই দানবিক শক্তি আমায় গ্রাস করে।

মুখ চেপে ধরে তার ক্রোধ,
হাত বেঁধে রাখে তার অধিকারবোধ,
পা নিশ্চল করে রাখে তার অদম্য লালসা।
সেই অবসরে একটি লালা-ঝরা জিভ নামতে থাকে আমার কন্ঠ থেকে নাভিমূলে।
দানবের বৃংহনে ঢাকা পড়ে যায় মধ্যরাতে আমার কোনো প্রেমিকের সিন্ধু- বাঁরোয়ার মীড়।
সেই দানবের প্রবল অট্টহাসিতে, আমার গর্ভজাত ভ্রূণ অবধি ভয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ার প্রার্থনা জানায় সৃষ্টিকর্তা কে।

দানবিক আকাঙ্খার বীর্যপতন ঘটে আমার শরীরে।
আমার আঁকড়ে ধরে রাখা একমাত্র পাশবালিশ রক্তাক্ত হয়ে গেছে ততক্ষণে বীর্যের রঙে।
আমার চোখের দৃষ্টি শূন্য হয়ে ফিরে চলে গেছে মনিকর্ণিকার চিতার লাল আভায়।

তারপর শেষে, ভালোবাসার যোনিপথে লোহার রড ঢুকে ছিন্নভিন্ন হয় আগামীর ভারতবর্ষ।

পরদিন আমার আর ঘুম ভাঙেনি।
আমার উলঙ্গ দেহটি, এক শারদ সকালে,
কাশফুলের বনে,
শকুনের আধখাওয়া খাবার হয়ে পড়েছিল।